শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:২৭ অপরাহ্ন
দশমিনা প্রতিনিধি ॥
দুঃখ যেখানে নিত্য আঘাত হানে তার জন্য দীর্ঘ জীবন প্রতিক্ষা ছাড়া আর কিছুই নেই। শহরে আর বাড়ি বাড়ি ঘুরে ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ করেন প্রতিবন্ধী মিলন হাওরাদারের পরিবারের। বর্তমানে প্রতিবন্ধী মিলন হাওলাদারের বয়স ৫১ বছর। গ্রাম থেকে প্রায় ২০ কিঃ মিঃ পথ পারি দিয়ে শহরে আসেন আর শহর থেকে গ্রামে হুউল গাড়িতে করে প্রতিদিন জান। কিন্তু কখনো ক্ষুধায় তার পেট জ্বলে। কে রাখে সে খবর।
প্রতিবন্ধী মিলন হাং বলেন ১০ বছর বয়সে আমার হঠাৎ জ্বড় হলে টিউমারের মত হাতে আর পায় দেখতে পাই। পরে আমা বাবা ঢাকায় চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেলে ডাঃ তার হাত পায়ের অবস্থা দেখে পরিক্ষা নিরিক্ষা করার পরে কেটে ফেলা ছাড়া আর কোন উপায় নেই বলেন। পরে খুব কষ্ট করে মানুষের কাছে সাহায্যের হাত পেতে কেটে ফেলেন ১ হাত আর ২ পা। বাধ্য হয়ে ভিক্ষার পথ বেচেঁ নেয় মিলন হাং। একা চরাচল করতে না পারাতে বিবাহ করান মিলন হাং কে। বিবাহের পরে স্ত্রীকে সাথে নিয়ে ভিক্ষা করতেন কিন্তু ২ কন্যা সন্তানের জম্ম দিয়ে স্ত্রী মারাযান। বর্তমানে মিলন হাওলাদারের ২ কন্যা শ্রাবনী(৯) ৫ম শ্রানিতে পড়ে আর ছোট কন্য হালিমা(৭) ৩য় শ্রানিতে পড়ে।
এই সামান্য আয়ে তার ৪ জনের সংসার চলে কোন ভাবে । অনেক দিন আধাপেটা আবার কোন দিন না খেয়ে থাকতে হয়। পটুয়াখালী জেলার দশমিনা উপজেলার রনগোপালদী ইউনিয়ানের ২নং ওয়ার্ডের দক্ষিন রনগোপালদী গামের মূত্যু-আঃ আজিজ হাং এর পুত্র মিলন হাং। হত দরিদ্র পরিবারে জন্ম আর পড়ালেখা সম্ভব হয়নি। ছোট বেলা থেকে অন্যের সাথে কাজ করতেন। বড় কন্যা শ্রাবনি বলেন, আমার বাবা একজন প্রতিবন্ধী বৃদ্ধ বয়সে অতি কষ্টে জীবিকা নির্বাহ বেদনা দায়ক হয়ে দারাবে। আমাদের দুই বোনের লেখা পড়ার খরচ আর তিন বেলা খাবার মুখে তুলে দিতে খুব কষ্ট করতে হয় বাবার। তবে প্রত্যেক জীবনে কিছু না কিছু বেপরীত্য থাকে। এই জীবনে এবং এই সংগ্রামে মানুষটি এর বাইরে না।
খুব ভোরে বাড়ি থেকে জীবনের ঝুকি নিয়ে ঘর ছাড়েন তিনি। ২ মেয়ের দেখা শুনার জন্য ঘরে তাদের নানীকে রেখেছেন মিলন হাং। বর্ষার মৌসুমে মিলন হাং খুব কস্টে রোদ-বৃস্টিতে বিজে উপার্যন করতে সর্বশান্ত। বর্তমানে মিলনের নিজস্ব ধানী জমি নেই। সম্পদ বলতে তার কোন কিছুই নেই তিনি সর্বশান্ত আর বসবাস করারমত কোন ঘরও নেই। ঘরে বৃষ্টির সময় অঝোরে বৃষ্টি পড়ে। মিলন হাওলাদারের পরিবারের উপোস কাপসে দিন কাটছে।
এই সমাজ এবং সরকার যারা জনগনের ভোটে নির্বাচিত অথচ মিলন হাওলাদারের মৌলিক চাহিদা পুরন করতে পারে না। সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষ দিতে পারেনা। খাদ্য, বস্ত্র, আশ্রায় শিক্ষা, চিকিৎসার নিশ্চয়তা। একটু সুখ আর স্বাচ্ছন্দবোধ কে না দেখতে চায়? তার এতটুকু আশা কিছু টাকা হলে স্থায়ীভাবে দোকান করতে পারবেন। মিলন হাওলাদারের পরিবারের পাশে খাদ্য ও ক্ষুদা বিমোচনে কেউ এগিয়ে আসবেন কি তার স্বপ্ন পুরনে ? আর কত করবে অপেক্ষা ? আর কত ফালাবে চোখের জল ?
Leave a Reply